Friday, June 19, 2015
রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলমানকে যে ৭টি কাজ অবশ্যই করতে হবে
জুবায়ের আল মাহমুদ রাসেল: আপনি জানেন কি পবিত্র রমজান মাসে কোন সাতটি কাজ প্রত্যেক মুসলমানকেই করতে হয়? পবিত্র রমজানের ইবাদত সম্পর্কে বুখারী ও মুসলিম শরীফে উল্লেখ আছে, ‘রমাদ্বান শরীফ-এ আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমল দশগুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়ে থাকে।’ তাই মুসলমান হিসেবে যে আমলগুলো অবশ্যই করতে হবে সেগুলো হলো-
১। রমাদ্বান শরীফ-এর প্রতিটি রোযা রাখা।
২। তারাবীহ নামায প্রতিদিন নিয়মিত আদায় করা।
৩। পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতের সাথে (পুরুষ হলে) আদায় করা।
৪। বেশি বেশি আল কোরআন তিলাওয়াত ও যিকির-আযকার করা।
৫। হালাল উপার্জন করা বা হালাল খাদ্য গ্রহণ করা।
৬। গরীব-মিসকীনদের ইফতার বা সাহরী ব্যবস্থার চেষ্টা করা।
৭। যাকাত ও ফিতরা আদায় করা।
১। রমাদ্বান শরীফ-এর প্রতিটি রোযা রাখা।
২। তারাবীহ নামায প্রতিদিন নিয়মিত আদায় করা।
৩। পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতের সাথে (পুরুষ হলে) আদায় করা।
৪। বেশি বেশি আল কোরআন তিলাওয়াত ও যিকির-আযকার করা।
৫। হালাল উপার্জন করা বা হালাল খাদ্য গ্রহণ করা।
৬। গরীব-মিসকীনদের ইফতার বা সাহরী ব্যবস্থার চেষ্টা করা।
৭। যাকাত ও ফিতরা আদায় করা।
তারাবীর নামাজ কয় রাকাত আদায় করা সুন্নত ?
ইসলাম ডেস্ক : তারাবীহ অর্থ আরাম,অবসর,বিশ্রাম,বিরতি। শরীয়তের পরিভাষায় রমজানুল মোবারকের রাতে এশার নামাজের পর যে নামায পড়া হয় তাকে তারাবীহ’র নামায বলা হয় ।
والتراويح جمع ترويحة وهى فى الاصل مصدر بمعنى الستراحة سميت به الاربع ركعات المخصوصة لاستلزامها استراحة بعدها كما هوا السنة فيها
অর্থাৎ-প্রতি চার রাকাত নামাযের পর সম পরিমাণ সময় আরাম বা বিশ্রাম নেয়া হয় বলে একে সালাতুত তারাবীহ্ বলা হয়। এ সময়টুকু বিশ্রাম নেয়া বা বিরতি দিয়ে পড়া সুন্নত। দ্রঃ বাহরুর রাঈক্ব খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৬৬
তারাবীহ্র মর্ম : তারাবীহ্র মর্মকথা বা আসল উদ্দেশ্য রমজানের রাতে জেগে থেকে ইবাদতি করা। ইমাম আল হাফিয ও আল কিরমানী এই মত প্রকাশ করে বলেছেন-
قال الحافط المراد من قيام الليل ما يحصل به مطلق القيام كما قدمناه فى التهجد سواء. وكذا النووى ان المراد بقيام رمضان الصلوة التراويح.. واغرب الكرمانى فقال اتفقو على ان المراد بقيام رمضان صلوة التراويح
তারাবিহ‘র নামায কত রাকাত : প্রসিদ্ধ চার ইমাম সহ জমহুর (প্রায় সকাল) উম্মত এ ব্যাপারে একমত যে তারাবীহ্র নামায কম পক্ষে ২০ রাকাত। ইমাম মালিক (রঃ) এর একটি বর্ণনা মতে তারাবীহ ৩৬ রাকাত এবং অপর বর্ণনায় ৪১ রাকাতও পাওয়া যায় তৃত্বীয় আরেক বর্ণনায় জমহুর উম্মতের মতই ২০ রাকাত পাওয়া যায় এর মধ্যে ৪১ রাকাতের সাথে তিন রাকাত বেতের আর দু রাকাত নফল অর্থাৎ ৪১ থেকে ৫ বিয়োগ হলে ৩৬ রাকাত ই অবশিষ্ট থাকে যা তারাবীহ হিসাবে গন্য। এরপর বাকী রইল ২০ রাকাত এবং ৩৬ রাকাতের দুটি বর্ণনা। এর বিস্তারিত বেদায়াতুল মুজতাহিদ কিতাবে ইমাম মালিক (রাঃ) বর্ণিত ৩৬ রাকাত ও ২০ রাকাতের এভাবে দেয়া হয়েছে যে, মক্কার মুসলমানদের সর্বদাই আমল ছিল যে তারা ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। কিন্তু তারা তারাবীহ‘র প্রতি চার রাকাত অন্তর অন্তর যে বিরতি দেয়া হত এ সময়ে ১ টি তওয়াফ সেরে ফেলতেন। অন্যদিকে মদীনার মুসলমানদের তওয়াফের সুযোগ না থাকায় তারা এ সময়ে আরো ৪ রাকাত পড়ে নিতেন। এ জন্য মদীনা বাসীর হয়ে যেত ২০+১৬ = ৩৬ রাকাত। এতে প্রমানিত হয় তারাবী ২০ রাকাতই এবং এর উপর চার ইমামই একমত। (দ্রঃ ফতোয়া এ ইবনে ক্বাদামা খন্ড-২ পৃষ্ঠা ১৬৭ বাহরুর রাইক্ব খন্ড ২ পৃষ্ঠা-৬৬ মাআরিফুস সুনান খন্ড ৬ পৃষ্ঠা-২২১ দারসে তিরমিয়ি ২য় খন্ড
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা হাবিবুর রহমান আযমী রাকাত এ তারাবীহ্ গ্রন্থের ৬১-৬২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষক পন্ডিতগন একথা স্পষ্ট করেছেন যে তারাবীহ্র নামায ২০ রাকাতই পড়া হত মক্কা মদীনায় কিন্তু সওয়াবের দৌড়ে মক্কাবাসী তওয়াফের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে যাচ্ছেন এই ভাবনায় মদীনার লোকেরা প্রতি চার রাকাত অন্তর একাকী আরো চার রাকাত পড়ে নিতেন। তাই ২০+১৬=৩৬ রাকাত হয়ে যেত। এতদ্ব্যাতীত এটাও প্রামানিত যে তারা জামাত শেষে রাতের শেষাংশেই এই ১৬ রাকাত পড়তেন। সুতরাং এটাই সত্য যে ইমাম মালিক (রঃ) তার বর্ণনায় ২০ রাকাত তারাবীহ্র সাথে মদীনাবাসীর অতিরিক্ত ১৬ রাকাতের কথাও বাদ দেন নি। ইমাম মালিক (রঃ) তার বর্ণনায় ২০ রাকাত তারাবীহ্র সাথে মদীনাবাসীর অতিরিক্ত ১৬ রাকাতের কথাও বাদ দেন নি।
ইমাম মালিক (রঃ) এর চতুর্থ আরেকটি বর্ণনায় বেতের সহ ১১ রাকাতের কথা পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লামা শামী (রঃ) এবং আবু বকর আল-আরবী বলেছেন এটা তার ব্যক্তিগত আমল ছিল বা থাকতে পারে। (দ্রঃ উমদাতুল ক্বারী) এদিকে তুহফাতুল আহওয়াযী গ্রন্থাকার এই বর্ণনার গুরুত্বই বেশী দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু হাবীবুর রহমান আযমী (রঃ) তার গ্রন্থের ৮৪-৮৮ পৃষ্ঠায় এর বিশদ আলোচনা করে একথা স্পষ্টই প্রমাণ করেছেন যে এই বর্ণনাটি কোন অবস্থায়ই ইমাম মালিক (রঃ) এর বর্ণনা বা তার মত হিসাবে গন্য করা ঠিক নয়।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাঃ) : প্রখ্যাত মুজতাহিদ চার মুযহাবের বাইরে সর্বাধিক,আলোচিতও খ্যাতনামা ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাঃ) এবং তার অনুসারী বিশেষত আমাদের সময়কার গায়র মুকাল্লিদীন (লা মাযহাবী) লোক প্রায় সকল উম্মতের ঐক্যমতের সাথে বিভেদ সৃষ্টি করে ৮ রাকাত তারাবীহ্র করে থাকেন। তারাবীহ সম্পর্কে আরো অনেক প্রশ্নও তুলেন। ৮ রাকাত ওয়ালাদের উত্থাপিত নানা প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এ সম্পর্কে কি বলেছেন তার পর্যালোচনা এবং সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা দরকার। তারাবীহ্র নামাযের রাকাত সম্পর্কে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একাধিক বক্তব্য ও মতামত পাওয়া যায়। যথা- রমজান এবং রমজানের আগে পরে রাসুল (সাঃ) ৮ রাকাত এবং ৩ রাকাত বেতের নামায পড়তেন। ৮ রাকাত নামায এতো দীর্ঘ হতো যে কখনো রাত অর্ধেক কখনো দুই তৃতত্বীয়াংশ এবং কখনো সেহরীর সময় শেষ হওয়ার উপক্রমক দেখাদিত। সুতরাং ক্বিয়ামে রমজানের আলাদা কোন নামায ছিলনা। এর প্রমাণ হযরত আয়েশা (রাঃ) এবং আবু যর (রাঃ) এর বর্ণিত দুটি হাদীস।
(ক) ১০ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত বেতের সহ ১৩ রাকাত।
(খ) ২০ রাকাত তারাবী এবং ১৬ রাকাত অতিরিক্ত ৩ রাকাত বেতের ২ রাকাত নফল সহ মোট ৩৬ ও (গ) রাকাত কিয়ামে লাইল।
(ঘ) অধিকাংশ উম্মত এবং প্রসিদ্ধ চার ইমামের ঐক্যমত ২০ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত বেতের।
(ঙ) তারাবী ৮ রাকাত এবং ৩ রাকাত বেতের মোট ১১ রাকাত কিয়ামে লাইল যা ইমাম মালিক (রঃ) এর বর্ণনা।
(চ) মুসল্লিদের অবস্থা বিবেচনায় ২০ রাকাত অথবা ৪১ রাকাত বা ১৩ রাকাত পড়া যাবে যাতে মুসল্লিরা বিরক্ত না হন।
(ছ) উম্মাহর ঐকমত্য হলো ২০ রাকাত বিধায় ৪১ আর ১১ এর মধ্যবর্তি ২০ রাকাতই উত্তম পন্থা। সর্বোপরি মুসল্লিদের অবস্থা বিবেচনা করে এবং একাকিত্বে নিজের মন ও শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে যে কোন এক পন্থা গ্রহণ করা যায়।
দ্রঃ মাজমুআ এ ফতোয়াই ইবনে তাইমিয়া ২২ খ ফতোয়াতুল কুবরা খন্ড ১ পৃষ্টা ১৭৬ মুজমুআ জাওয়ায়েদ খন্ডত পৃষ্ঠা ১৭২
মুহাদ্দিস হাবিবুর রহমান আযমী তার গ্রন্থে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে ইমাম ইবনে তাই মিয়া (রঃ) ২০ রাকাতকেই মধ্যম পন্থা। এবং উম্মতের ঐকমত্য হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন বিধায় এ ব্যাপারে আর কোন নতুন ইখতিলাফ করা ঠিক নয়্ হাদীসের বর্ণনার বিভিন্নতার কারণেই তার মতামত গুলো ব্যক্ত করতে একাধিক মত পরিলক্ষিত এবং আট রাকাতের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মনে হলেও তিনি একাধিকবার বলেছেন যে ২০ রাকাতের উপর উম্মত ঐকমত্য সুতরাং-২০ রাকাত সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে আর কোন সংশয় তার উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না।
والتراويح ان صلاّهاكمذهب ابى حنيفة والشافغى واحمد عشرين ركعته او كمذهب مالك ستاوثلاثين اوثلاث عشرة اِحدى عشرة فقدأحسن ….وكذا فى الفتاوى الكبرى لابن تيميه قد جاء مصرحا فى السنن انه لما صلى بهم قام رمضان بعدالعشاء وكان النبى صلى الله عليه و سلم قيامه بااليل هو وتره يصلى بالليل فى رمضان وغير رمضان… قد ثبت ان ابى ابن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة فى قيام رمضان ويؤتر بالثلاث..
মুফতি তক্বী উসমানী ঃ বেশ গবেষণার পর এটাই সাব্যস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন যে ২০ রাকাত তরাবীহ সুন্নাত। তিনি লিখেছেন এ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত জনার জন্য এই মসলকের সমর্থিত দলীল প্রমাণ ভিত্তিক কিতাব তোহফাতুল আহওয়াযী খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৭২-৭৬ দেখা যেতে পারে।
শায়খ ইবনে হুমাম (রঃ): তারাবীহ্র নামায কত রাকাত এ প্রশ্নে শায়খ ইবনে হুমাম (রঃ) জমহুর উম্মতের মতামতের সাথে একমত পোষন না করে ৮ রাকাতকে প্রধান্য দিয়েছেন। যদিও তিনিই আবার ২০ রাকাত তারাবীহকে সুন্নতে খোলাফা এ রাশেধীন মেনে লিখেছেন এগার রাকাতের মধ্য দিয়েই ক্বিয়ামে রমজান হাসিল হয়ে যায় বেতের সহ জামায়াতের সাথে। রাসুল (সাঃ) তাই করেছেন এবং অসুবিধা জনিত কারনে ছেড়েছেনও। মুসল্লিদের কষ্টও বিবেচনায় ছিল। আর এভাবেই চলছিল তাঁর ইন্তেকাল অবদি। তাই এটাই সুন্নত আর ২০ রাকাত সুন্নত খোলাফা ই রাশিদীন এর। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাাহ (সাঃ) বলেছেন তোমাদের প্রতি আমার সুন্নত এবং খোলাফা এ রাশিদীনেরও সুন্নত (সমান প্রযোজ্য)। দ্রঃ ফহহুল কাদির খন্ড ১ , পৃষ্ঠা- ৩৩৪
তবে আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী (রঃ) ফাতহুল কাদিরের এসব বকতব্য দলীল প্রমানের ভিত্তিতে অগ্রহনযোগ্য এবং ইজমা এ উম্মতের বিপরিত সাব্যস্থ করেছেন। তার প্রতিটি বাক্যের সাথে নির্ভর যোগ্য দলীলও রয়েছে। (দ্রঃ আলাউসসুনান খন্ড ৭ পৃষ্ঠা ৬৮-৭২ তারাবীহ অধ্যায় )
والتراويح جمع ترويحة وهى فى الاصل مصدر بمعنى الستراحة سميت به الاربع ركعات المخصوصة لاستلزامها استراحة بعدها كما هوا السنة فيها
অর্থাৎ-প্রতি চার রাকাত নামাযের পর সম পরিমাণ সময় আরাম বা বিশ্রাম নেয়া হয় বলে একে সালাতুত তারাবীহ্ বলা হয়। এ সময়টুকু বিশ্রাম নেয়া বা বিরতি দিয়ে পড়া সুন্নত। দ্রঃ বাহরুর রাঈক্ব খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৬৬
তারাবীহ্র মর্ম : তারাবীহ্র মর্মকথা বা আসল উদ্দেশ্য রমজানের রাতে জেগে থেকে ইবাদতি করা। ইমাম আল হাফিয ও আল কিরমানী এই মত প্রকাশ করে বলেছেন-
قال الحافط المراد من قيام الليل ما يحصل به مطلق القيام كما قدمناه فى التهجد سواء. وكذا النووى ان المراد بقيام رمضان الصلوة التراويح.. واغرب الكرمانى فقال اتفقو على ان المراد بقيام رمضان صلوة التراويح
তারাবিহ‘র নামায কত রাকাত : প্রসিদ্ধ চার ইমাম সহ জমহুর (প্রায় সকাল) উম্মত এ ব্যাপারে একমত যে তারাবীহ্র নামায কম পক্ষে ২০ রাকাত। ইমাম মালিক (রঃ) এর একটি বর্ণনা মতে তারাবীহ ৩৬ রাকাত এবং অপর বর্ণনায় ৪১ রাকাতও পাওয়া যায় তৃত্বীয় আরেক বর্ণনায় জমহুর উম্মতের মতই ২০ রাকাত পাওয়া যায় এর মধ্যে ৪১ রাকাতের সাথে তিন রাকাত বেতের আর দু রাকাত নফল অর্থাৎ ৪১ থেকে ৫ বিয়োগ হলে ৩৬ রাকাত ই অবশিষ্ট থাকে যা তারাবীহ হিসাবে গন্য। এরপর বাকী রইল ২০ রাকাত এবং ৩৬ রাকাতের দুটি বর্ণনা। এর বিস্তারিত বেদায়াতুল মুজতাহিদ কিতাবে ইমাম মালিক (রাঃ) বর্ণিত ৩৬ রাকাত ও ২০ রাকাতের এভাবে দেয়া হয়েছে যে, মক্কার মুসলমানদের সর্বদাই আমল ছিল যে তারা ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। কিন্তু তারা তারাবীহ‘র প্রতি চার রাকাত অন্তর অন্তর যে বিরতি দেয়া হত এ সময়ে ১ টি তওয়াফ সেরে ফেলতেন। অন্যদিকে মদীনার মুসলমানদের তওয়াফের সুযোগ না থাকায় তারা এ সময়ে আরো ৪ রাকাত পড়ে নিতেন। এ জন্য মদীনা বাসীর হয়ে যেত ২০+১৬ = ৩৬ রাকাত। এতে প্রমানিত হয় তারাবী ২০ রাকাতই এবং এর উপর চার ইমামই একমত। (দ্রঃ ফতোয়া এ ইবনে ক্বাদামা খন্ড-২ পৃষ্ঠা ১৬৭ বাহরুর রাইক্ব খন্ড ২ পৃষ্ঠা-৬৬ মাআরিফুস সুনান খন্ড ৬ পৃষ্ঠা-২২১ দারসে তিরমিয়ি ২য় খন্ড
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা হাবিবুর রহমান আযমী রাকাত এ তারাবীহ্ গ্রন্থের ৬১-৬২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষক পন্ডিতগন একথা স্পষ্ট করেছেন যে তারাবীহ্র নামায ২০ রাকাতই পড়া হত মক্কা মদীনায় কিন্তু সওয়াবের দৌড়ে মক্কাবাসী তওয়াফের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে যাচ্ছেন এই ভাবনায় মদীনার লোকেরা প্রতি চার রাকাত অন্তর একাকী আরো চার রাকাত পড়ে নিতেন। তাই ২০+১৬=৩৬ রাকাত হয়ে যেত। এতদ্ব্যাতীত এটাও প্রামানিত যে তারা জামাত শেষে রাতের শেষাংশেই এই ১৬ রাকাত পড়তেন। সুতরাং এটাই সত্য যে ইমাম মালিক (রঃ) তার বর্ণনায় ২০ রাকাত তারাবীহ্র সাথে মদীনাবাসীর অতিরিক্ত ১৬ রাকাতের কথাও বাদ দেন নি। ইমাম মালিক (রঃ) তার বর্ণনায় ২০ রাকাত তারাবীহ্র সাথে মদীনাবাসীর অতিরিক্ত ১৬ রাকাতের কথাও বাদ দেন নি।
ইমাম মালিক (রঃ) এর চতুর্থ আরেকটি বর্ণনায় বেতের সহ ১১ রাকাতের কথা পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লামা শামী (রঃ) এবং আবু বকর আল-আরবী বলেছেন এটা তার ব্যক্তিগত আমল ছিল বা থাকতে পারে। (দ্রঃ উমদাতুল ক্বারী) এদিকে তুহফাতুল আহওয়াযী গ্রন্থাকার এই বর্ণনার গুরুত্বই বেশী দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু হাবীবুর রহমান আযমী (রঃ) তার গ্রন্থের ৮৪-৮৮ পৃষ্ঠায় এর বিশদ আলোচনা করে একথা স্পষ্টই প্রমাণ করেছেন যে এই বর্ণনাটি কোন অবস্থায়ই ইমাম মালিক (রঃ) এর বর্ণনা বা তার মত হিসাবে গন্য করা ঠিক নয়।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাঃ) : প্রখ্যাত মুজতাহিদ চার মুযহাবের বাইরে সর্বাধিক,আলোচিতও খ্যাতনামা ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাঃ) এবং তার অনুসারী বিশেষত আমাদের সময়কার গায়র মুকাল্লিদীন (লা মাযহাবী) লোক প্রায় সকল উম্মতের ঐক্যমতের সাথে বিভেদ সৃষ্টি করে ৮ রাকাত তারাবীহ্র করে থাকেন। তারাবীহ সম্পর্কে আরো অনেক প্রশ্নও তুলেন। ৮ রাকাত ওয়ালাদের উত্থাপিত নানা প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এ সম্পর্কে কি বলেছেন তার পর্যালোচনা এবং সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা দরকার। তারাবীহ্র নামাযের রাকাত সম্পর্কে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একাধিক বক্তব্য ও মতামত পাওয়া যায়। যথা- রমজান এবং রমজানের আগে পরে রাসুল (সাঃ) ৮ রাকাত এবং ৩ রাকাত বেতের নামায পড়তেন। ৮ রাকাত নামায এতো দীর্ঘ হতো যে কখনো রাত অর্ধেক কখনো দুই তৃতত্বীয়াংশ এবং কখনো সেহরীর সময় শেষ হওয়ার উপক্রমক দেখাদিত। সুতরাং ক্বিয়ামে রমজানের আলাদা কোন নামায ছিলনা। এর প্রমাণ হযরত আয়েশা (রাঃ) এবং আবু যর (রাঃ) এর বর্ণিত দুটি হাদীস।
(ক) ১০ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত বেতের সহ ১৩ রাকাত।
(খ) ২০ রাকাত তারাবী এবং ১৬ রাকাত অতিরিক্ত ৩ রাকাত বেতের ২ রাকাত নফল সহ মোট ৩৬ ও (গ) রাকাত কিয়ামে লাইল।
(ঘ) অধিকাংশ উম্মত এবং প্রসিদ্ধ চার ইমামের ঐক্যমত ২০ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত বেতের।
(ঙ) তারাবী ৮ রাকাত এবং ৩ রাকাত বেতের মোট ১১ রাকাত কিয়ামে লাইল যা ইমাম মালিক (রঃ) এর বর্ণনা।
(চ) মুসল্লিদের অবস্থা বিবেচনায় ২০ রাকাত অথবা ৪১ রাকাত বা ১৩ রাকাত পড়া যাবে যাতে মুসল্লিরা বিরক্ত না হন।
(ছ) উম্মাহর ঐকমত্য হলো ২০ রাকাত বিধায় ৪১ আর ১১ এর মধ্যবর্তি ২০ রাকাতই উত্তম পন্থা। সর্বোপরি মুসল্লিদের অবস্থা বিবেচনা করে এবং একাকিত্বে নিজের মন ও শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে যে কোন এক পন্থা গ্রহণ করা যায়।
দ্রঃ মাজমুআ এ ফতোয়াই ইবনে তাইমিয়া ২২ খ ফতোয়াতুল কুবরা খন্ড ১ পৃষ্টা ১৭৬ মুজমুআ জাওয়ায়েদ খন্ডত পৃষ্ঠা ১৭২
মুহাদ্দিস হাবিবুর রহমান আযমী তার গ্রন্থে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে ইমাম ইবনে তাই মিয়া (রঃ) ২০ রাকাতকেই মধ্যম পন্থা। এবং উম্মতের ঐকমত্য হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন বিধায় এ ব্যাপারে আর কোন নতুন ইখতিলাফ করা ঠিক নয়্ হাদীসের বর্ণনার বিভিন্নতার কারণেই তার মতামত গুলো ব্যক্ত করতে একাধিক মত পরিলক্ষিত এবং আট রাকাতের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মনে হলেও তিনি একাধিকবার বলেছেন যে ২০ রাকাতের উপর উম্মত ঐকমত্য সুতরাং-২০ রাকাত সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে আর কোন সংশয় তার উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না।
والتراويح ان صلاّهاكمذهب ابى حنيفة والشافغى واحمد عشرين ركعته او كمذهب مالك ستاوثلاثين اوثلاث عشرة اِحدى عشرة فقدأحسن ….وكذا فى الفتاوى الكبرى لابن تيميه قد جاء مصرحا فى السنن انه لما صلى بهم قام رمضان بعدالعشاء وكان النبى صلى الله عليه و سلم قيامه بااليل هو وتره يصلى بالليل فى رمضان وغير رمضان… قد ثبت ان ابى ابن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة فى قيام رمضان ويؤتر بالثلاث..
মুফতি তক্বী উসমানী ঃ বেশ গবেষণার পর এটাই সাব্যস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন যে ২০ রাকাত তরাবীহ সুন্নাত। তিনি লিখেছেন এ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত জনার জন্য এই মসলকের সমর্থিত দলীল প্রমাণ ভিত্তিক কিতাব তোহফাতুল আহওয়াযী খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৭২-৭৬ দেখা যেতে পারে।
শায়খ ইবনে হুমাম (রঃ): তারাবীহ্র নামায কত রাকাত এ প্রশ্নে শায়খ ইবনে হুমাম (রঃ) জমহুর উম্মতের মতামতের সাথে একমত পোষন না করে ৮ রাকাতকে প্রধান্য দিয়েছেন। যদিও তিনিই আবার ২০ রাকাত তারাবীহকে সুন্নতে খোলাফা এ রাশেধীন মেনে লিখেছেন এগার রাকাতের মধ্য দিয়েই ক্বিয়ামে রমজান হাসিল হয়ে যায় বেতের সহ জামায়াতের সাথে। রাসুল (সাঃ) তাই করেছেন এবং অসুবিধা জনিত কারনে ছেড়েছেনও। মুসল্লিদের কষ্টও বিবেচনায় ছিল। আর এভাবেই চলছিল তাঁর ইন্তেকাল অবদি। তাই এটাই সুন্নত আর ২০ রাকাত সুন্নত খোলাফা ই রাশিদীন এর। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাাহ (সাঃ) বলেছেন তোমাদের প্রতি আমার সুন্নত এবং খোলাফা এ রাশিদীনেরও সুন্নত (সমান প্রযোজ্য)। দ্রঃ ফহহুল কাদির খন্ড ১ , পৃষ্ঠা- ৩৩৪
তবে আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী (রঃ) ফাতহুল কাদিরের এসব বকতব্য দলীল প্রমানের ভিত্তিতে অগ্রহনযোগ্য এবং ইজমা এ উম্মতের বিপরিত সাব্যস্থ করেছেন। তার প্রতিটি বাক্যের সাথে নির্ভর যোগ্য দলীলও রয়েছে। (দ্রঃ আলাউসসুনান খন্ড ৭ পৃষ্ঠা ৬৮-৭২ তারাবীহ অধ্যায় )
রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহ:
১. ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
২. স্ত্রী সহবাস করলে ।
৩. কুলি করার সময় হলকের নিচে
পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার
কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
৪. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
৫. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা
কানে
ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
৬. জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে।
৭. ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
৮. কংকর পাথর বা ফলের বিচি
গিলে
ফেললে।
৯. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে
ইফতার
করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১১. দাঁত হতে ছোলা পরিমান
খাদ্য- দ্রব্য গিলে ফেললে।
১২. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত
লোবান বা
আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন
করলে।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে
ফেললে ।
১৪. রাত্রি আছে মনে করে
সোবহে
সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর
নিদ্রা হতে
জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু
কাজা ওয়াজিব হবে।
# রোজার মাকরুহ সমূহ:
১. অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা ২. কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে
রাখা
৩. গড়গড় করা বা নাকের ভেতর
পানি
টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি
নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
৪. ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে
গলাধঃকরণ করা
৫. গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-
ফাসাদ করা।
৬. সাড়াদিন নাপাক অবস্থায় থাকা।
৭. অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ
করা।
৮. কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার,
পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা
দাঁত পরিষ্কার করা
২. স্ত্রী সহবাস করলে ।
৩. কুলি করার সময় হলকের নিচে
পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার
কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
৪. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
৫. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা
কানে
ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
৬. জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে।
৭. ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
৮. কংকর পাথর বা ফলের বিচি
গিলে
ফেললে।
৯. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে
ইফতার
করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১১. দাঁত হতে ছোলা পরিমান
খাদ্য- দ্রব্য গিলে ফেললে।
১২. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত
লোবান বা
আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন
করলে।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে
ফেললে ।
১৪. রাত্রি আছে মনে করে
সোবহে
সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর
নিদ্রা হতে
জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু
কাজা ওয়াজিব হবে।
# রোজার মাকরুহ সমূহ:
১. অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা ২. কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে
রাখা
৩. গড়গড় করা বা নাকের ভেতর
পানি
টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি
নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
৪. ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে
গলাধঃকরণ করা
৫. গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-
ফাসাদ করা।
৬. সাড়াদিন নাপাক অবস্থায় থাকা।
৭. অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ
করা।
৮. কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার,
পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা
দাঁত পরিষ্কার করা
ডাটা খরচ কমাতে আসছে 'অপেরা ম্যাক্স'
বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য ইন্টারনেট ডাটা সাশ্রয়ের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে এসেছে ইন্টারনেট ব্রাউজার অপেরা। 'অপেরা ম্যাক্স' নামের এই অ্যাপটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাদের ডিভাইসে ইনস্টল করে নিলে বর্তমান ডাটা খরচের চেয়ে সাশ্রয়ী হবে অনেকখানি।
চলতি সপ্তাহে অ্যাপটি বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য অবমুক্ত করেছে অপেরা। এখন থেকে চাইলেই গুগল প্লে স্টোর থেকে যে কেউ ডাউনলোড করে নিতে পারবে অ্যাপ্লিকেশনটি। এটি মোবাইল ডাটা কানেকশন বা ওয়াইফাই উভয় ক্ষেত্রেই ভিডিও ও ছবি’র আকার একটি নির্দিষ্ট পরিমানে কমিয়ে আনবে বলে জানিয়েছে সফওয়্যারটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অ্যাপটি সম্পর্কে অপেরার কাস্টমার সার্ভিস ম্যানাজার জানান, ‘অ্যাপ্লিকেশনটি গ্রাহকরা তাদের ডিভাইসে ইনস্টল করে নিলে ডাটা প্ল্যানের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং ডাটা ইউজেসের ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেবে বলে আমরা মনে করছি।'
ডাটা খরচ কমানোর পাশাপাশি অপেরা ম্যাক্স দিয়ে কম্প্রেশন ফিচারের মাধ্যমে গ্রাহকরা নেটওয়ার্ক জট এড়িয়ে দ্রুত গতির ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারবেন। এটির সাহায্যে অপ্রোয়জনীয় অ্যাপগুলোকে চিহ্নিত এবং সেগুলোকে ব্লক করে দেয়া যাবে সহজেই।
ব্যবহাকারীদের জন্য অ্যাপ্লিকেশন ‘অপেরা ম্যাক্স’ নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। এবং এই অ্যাপের সাহায্যে ভিডিওর আকার ছোট করে এবং ভিডিও বাফারিংয়ের পরিমাণ লক্ষণীয় পরিমাণে কমিয়ে এনে ইন্টারনেট ডিভাইসের ডাটা খরচের পরিমাণ অনেক সাশ্রয়ী করে তোলা যাবে।
টেলিটক নিয়ে এলো নতুন সিম ‘জোনাকি’
টেলিটক নিয়ে এলো বিশেষ সিম ‘জোনাকি’। মাত্র ৮০ টাকায় জোনাকি প্যাকেজের সিম এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। জোনাকি প্যাকেজের বিশেষ সুবিধা হলো, এই সিম দিয়ে ঘরে বসে খুব সহজেই পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল পরিশোধ করা যাবে।
এছাড়া জোনাকি প্যাকেজে টেলিটক টু টেলিটক কথা বলে যাবে প্রতি সেকেণ্ড মাত্র আধা পয়সায়। টেলিটক ছাড়া অন্য অপারেটরে কথা বলতে খরচ হবে প্রতি সেকেণ্ড মাত্র এক পয়সায়।
এই সিমে একটি টেলিটক ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট চালু করা যাবে। এরপর ওয়ালেটে টাকা রিচার্জ করে সেই টাকায় ঘরে বসেই পরিশোধ করা যাবে পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল।
এছাড়া জোনাকি সিমে রয়েছে হ্রাসকৃত মূল্যে বিশেষ ডাটা প্যাকেজ। খুব কম টাকায় আপনি পাবেন থ্রি-জি ইন্টারনেট সুবিধা।
সারাদেশে সিমটি এখন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ www.taletalk.com.bd
সকল দিনের শ্রেষ্ঠ দিনটি আবার ঘুরে এসছে
আলহামদুলিল্লাহ ... আরেকটি জুম্মা - সকল দিনের শ্রেষ্ঠ দিনটি আবার ঘুরে এসছে । আপনি কি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন না ? এই দিনটিকে বৃথা নষ্ট হতে দেবেন না কারণ বহু বরকত ও ফজিলত নিহিত রয়েছে আজকের দিনটিতে
নিম্নলিখিতি সুন্নাত গুলো আদায় করতে সচেষ্ট হন : !!►►
১) ফজরের সালাত জামাতে আদায় করুন (আল-বায়হাকী , সহী আল-আলবানি, ১১১৯)
২) সালাত আল-জুম্মার পূর্বের এবং পরের করণীয়ঃ
➲ জুম্মার দিন গোসল করা (বুখারী এবং মুসলিম : # ১৯৫১ এবং # ৯৭৭)
➲ জুম্মার সালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া (বুখারী এবং মুসলিম : # ৯২৯ এবং ১৯৬৪)
➲ পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা (আল-তিরমিজি, ৪৯৬)
➲ মনোযোগ সহকারে জুম্মার খুৎবা শোনা (আল-বুখারী ৯৩৪ এবং মুসলিম ৮৫১)
৩) জুম্মার দিন আপনার দুয়া কবুল হবার সেই মুহূর্তটির অনুসন্ধান করুন (বুখারী এবং মুসলিম : # ৯৩৫ এবং # ১৯৬৯)
৪) সূরা কাহাফ তিলাওয়াত (আল-হাকিম, ২/৩৯৯; আল-বায়হাকী, ৩/২৪৯)
৫) আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপর দুরদ পাঠ (ইবনে মাজাহ # ১০৮৫ , আবু দাউদ , # ১০৪৭)
১) ফজরের সালাত জামাতে আদায় করুন (আল-বায়হাকী , সহী আল-আলবানি, ১১১৯)
২) সালাত আল-জুম্মার পূর্বের এবং পরের করণীয়ঃ
➲ জুম্মার দিন গোসল করা (বুখারী এবং মুসলিম : # ১৯৫১ এবং # ৯৭৭)
➲ জুম্মার সালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া (বুখারী এবং মুসলিম : # ৯২৯ এবং ১৯৬৪)
➲ পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা (আল-তিরমিজি, ৪৯৬)
➲ মনোযোগ সহকারে জুম্মার খুৎবা শোনা (আল-বুখারী ৯৩৪ এবং মুসলিম ৮৫১)
৩) জুম্মার দিন আপনার দুয়া কবুল হবার সেই মুহূর্তটির অনুসন্ধান করুন (বুখারী এবং মুসলিম : # ৯৩৫ এবং # ১৯৬৯)
৪) সূরা কাহাফ তিলাওয়াত (আল-হাকিম, ২/৩৯৯; আল-বায়হাকী, ৩/২৪৯)
৫) আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপর দুরদ পাঠ (ইবনে মাজাহ # ১০৮৫ , আবু দাউদ , # ১০৪৭)
Wednesday, June 17, 2015
অক্টোবরে পৌর ও আগামী বছরের প্রথমদিকে ইউপি নির্বাচন
নিউজ ডেস্ক : নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানিয়েছেন, চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে পৌরসভার নির্বাচন এবং আগামী বছরের প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার শহরের ষোলঘর এলাকায় নতুন জায়গায় চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিসের ভবন ও কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
স্মার্ট কার্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জায়গা সংকটের কারণে স্মার্ট কার্ডের যাবতীয় কাজ বিলম্ব হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ জন্য জায়গা চাওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই জায়গা পাওয়া যাবে। তাহলে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে স্মার্ট কার্ড দেয়া যাবে।
তিনি এও বলেন, বর্তমানে যে কার্ড আছে তা খুব সহজেই নকল করা যাচ্ছে । যে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে- তা আধুনিক। এই কার্ড বিন্দুমাত্র নকল বা ডুপ্লিকেট করা যাবে না।
জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ফোনে উত্ত্যক্ত করলে যেভাবে বের করতে পারবেন তার নাম-ঠিকানা
নিউজ ডেস্ক : অচেনা নম্বর থেকে ক্রমাগত কল বা মিসকল আসার মত বিরক্তিকর ব্যাপার কিছুই হতে পারে না। বিশেষত মেয়েদের জন্যে এই ভোগান্তি তো একেবারেই অলিখিত। বকাঝকা, ফোন সাইলেন্ট করে রাখা কোন কিছুতেই যেন কাজ হয় না।
কিন্তু ভাবুন তো, অচেনা এই লোকটির নাম ঠিকানা যদি এক মিনিটেই আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসে, আর আপনি উলটো তার নাম ধরে ডেকে বেশ ভালো রকম একটা হুমকি দিতে পারেন, কিংবা সহজেই পুলিশের কাছে তার নাম ঠিকানা দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে কি ভালোটাই না হতো! না স্বপ্ন নয় একেবারেই, প্রযুক্তির উৎকর্ষে এই ছোট্ট কাজটি আপনি করতে পারেন স্রেফ ঘরে বসেই। আপনার স্মার্টফোনে গুগল প্লে স্টোর থেকে কয়েক সেকেন্ডেই নামিয়ে নিতে পারেন, এইসব অচেনা নাম্বার থেকে ফোনদাতার নাম ঠিকানা, সবই!
True caller:
এই ছোট্ট অ্যাপস টি পাবেন গুগল প্লে স্টোরে। এটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে নিন। তারপর কোন অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলেই, স্রেফ জাদুর মত আপনার ফোনে ভেসে উঠবে কলদাতার নাম। তবে হ্যাঁ, শর্ত প্রযোজ্য। সেই নম্বরটি যদি তার নামে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, তবেই আপনি এই সুবিধাটা পাবেন। আর সেই লোক যদি ফেসবুকে এই নম্বরটি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তো দেখতে পাবেন তার ছবি সহই! দেখে নিন তো, পরিচিত কেউই আপনার সাথে এই বিরক্তিকর আচরণটি করছে কিনা! বাড়তি পাওনা হিসেবে বিনেপয়সায় আপনি এই কলদাতাকে ব্লক করে রাখতে পারবেন।
Facebook:
বার বার ফোন করতেই থাকা বিরক্তিকর নম্বরটিকে কিন্তু আপনি ট্র্যাক করতে পারেন ফেসবুকের মাধ্যমেও। ফেসবুকের সার্চ অপশনে গিয়ে ফোন নম্বরটি টাইপ করুন। সে ব্যক্তি যদি এই ফোন নম্বরটি তার একাউন্টে ব্যবহার করে (করার সম্ভাবনা খুব বেশী), তাহলে তাকে সহজেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
LINE whoscall:
অনেকটা ট্রুকলারের মতই এটিও অচেনা ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম ও অন্যান তথ্য ও তার মোবাইলে লোকেশন অন থাকলে তার ঠিকানা অব্দি দেখিয়ে দেবে আপনাকে।
Mobile Number Locator:
অচেনা নম্বর থেকে ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম জানবে এই অ্যাপটি। অ্যাপটির অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, এটি ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াই কাজ করে। ইনকামিং ও আউটগোয়িং কল চলাকালীনই কলারের ও প্রাপকের বিস্তারিত জানিয়ে দেয় এই অ্যাপ। গুগল ম্যাপের সাহায্যে এই অ্যাপ কলারের লোকেশনও দেখিয়ে দেবে।
আমি নিজে ট্রুকলার ব্যবহার করি। তবে, আপনি আপনার সুবিধামত যে কোনটি বেছে নিতে পারেন। আর দেরী কেন, মুখোশ খুলে নিন বিরক্তিকর ফোন বা মিসকলদাতার। ভালো থাকুন!
কিন্তু ভাবুন তো, অচেনা এই লোকটির নাম ঠিকানা যদি এক মিনিটেই আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসে, আর আপনি উলটো তার নাম ধরে ডেকে বেশ ভালো রকম একটা হুমকি দিতে পারেন, কিংবা সহজেই পুলিশের কাছে তার নাম ঠিকানা দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে কি ভালোটাই না হতো! না স্বপ্ন নয় একেবারেই, প্রযুক্তির উৎকর্ষে এই ছোট্ট কাজটি আপনি করতে পারেন স্রেফ ঘরে বসেই। আপনার স্মার্টফোনে গুগল প্লে স্টোর থেকে কয়েক সেকেন্ডেই নামিয়ে নিতে পারেন, এইসব অচেনা নাম্বার থেকে ফোনদাতার নাম ঠিকানা, সবই!
True caller:
এই ছোট্ট অ্যাপস টি পাবেন গুগল প্লে স্টোরে। এটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে নিন। তারপর কোন অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলেই, স্রেফ জাদুর মত আপনার ফোনে ভেসে উঠবে কলদাতার নাম। তবে হ্যাঁ, শর্ত প্রযোজ্য। সেই নম্বরটি যদি তার নামে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, তবেই আপনি এই সুবিধাটা পাবেন। আর সেই লোক যদি ফেসবুকে এই নম্বরটি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তো দেখতে পাবেন তার ছবি সহই! দেখে নিন তো, পরিচিত কেউই আপনার সাথে এই বিরক্তিকর আচরণটি করছে কিনা! বাড়তি পাওনা হিসেবে বিনেপয়সায় আপনি এই কলদাতাকে ব্লক করে রাখতে পারবেন।
Facebook:
বার বার ফোন করতেই থাকা বিরক্তিকর নম্বরটিকে কিন্তু আপনি ট্র্যাক করতে পারেন ফেসবুকের মাধ্যমেও। ফেসবুকের সার্চ অপশনে গিয়ে ফোন নম্বরটি টাইপ করুন। সে ব্যক্তি যদি এই ফোন নম্বরটি তার একাউন্টে ব্যবহার করে (করার সম্ভাবনা খুব বেশী), তাহলে তাকে সহজেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
LINE whoscall:
অনেকটা ট্রুকলারের মতই এটিও অচেনা ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম ও অন্যান তথ্য ও তার মোবাইলে লোকেশন অন থাকলে তার ঠিকানা অব্দি দেখিয়ে দেবে আপনাকে।
Mobile Number Locator:
অচেনা নম্বর থেকে ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম জানবে এই অ্যাপটি। অ্যাপটির অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, এটি ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াই কাজ করে। ইনকামিং ও আউটগোয়িং কল চলাকালীনই কলারের ও প্রাপকের বিস্তারিত জানিয়ে দেয় এই অ্যাপ। গুগল ম্যাপের সাহায্যে এই অ্যাপ কলারের লোকেশনও দেখিয়ে দেবে।
আমি নিজে ট্রুকলার ব্যবহার করি। তবে, আপনি আপনার সুবিধামত যে কোনটি বেছে নিতে পারেন। আর দেরী কেন, মুখোশ খুলে নিন বিরক্তিকর ফোন বা মিসকলদাতার। ভালো থাকুন!
কলেজে ভর্তির আবেদনের সময় বাড়ালো ৩ দিন
নিউজ ডেস্ক : একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন করার সময় তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২১ জুন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
এর আগে আবেদনের শেষ দিন ছিল ১৮ জুন।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানোর কথা জানায়।
এবার (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) একাদশে ভর্তির জন্য অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি ও প্রতারণতার শিকার হচ্ছেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে (উচ্চ মাধ্যমিক) শিক্ষার্থী ভর্তি কার্ক্রম শুরু হয় গত ৬ জুন আর শেষ দিন ছিল ১৮ জুন। ‘২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা-২০১৫’ অনুযায়ী ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ক্লাশ শুরু হবে ১ জুলাই।
বিগত কয়েক বছরের মত এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর বিলম্ব ফি দিয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
নীতিমালা অনুযায়ী, টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে ১৫০ টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১২০ টাকা দিয়ে, সর্বোচ্চ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পছন্দক্রমে রাখা যাবে।
অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখছেন, তাদের রোল নম্বর ব্যবহার করে ইচ্ছামতো ৫টি কলেজের নাম দিয়ে কে বা কারা আবেদন করে ফেলেছেন। এছাড়া অনলাইন আবেদনের (স্মার্ট অ্যাডমিশন সিস্টেম) প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণেও ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা। শিক্ষার্থী প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি কলেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে আবেদনের শেষ দিন ছিল ১৮ জুন।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানোর কথা জানায়।
এবার (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) একাদশে ভর্তির জন্য অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি ও প্রতারণতার শিকার হচ্ছেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে (উচ্চ মাধ্যমিক) শিক্ষার্থী ভর্তি কার্ক্রম শুরু হয় গত ৬ জুন আর শেষ দিন ছিল ১৮ জুন। ‘২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা-২০১৫’ অনুযায়ী ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ক্লাশ শুরু হবে ১ জুলাই।
বিগত কয়েক বছরের মত এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর বিলম্ব ফি দিয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
নীতিমালা অনুযায়ী, টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে ১৫০ টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১২০ টাকা দিয়ে, সর্বোচ্চ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পছন্দক্রমে রাখা যাবে।
অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখছেন, তাদের রোল নম্বর ব্যবহার করে ইচ্ছামতো ৫টি কলেজের নাম দিয়ে কে বা কারা আবেদন করে ফেলেছেন। এছাড়া অনলাইন আবেদনের (স্মার্ট অ্যাডমিশন সিস্টেম) প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণেও ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা। শিক্ষার্থী প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি কলেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার থেকে রোজা, ১৪ জুলাই শবে কদর
নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের আকাশে কোথাও মাহে রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হবে। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সভাকক্ষে চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান জানান, আজ বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যায়নি। শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হবে। সেহেরি খেতে হবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। ১৪ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শবে কদরের দিন ধার্য করা হয়।
এর আগে মাগরিবের নামাজের পর সভাকক্ষে আলোচনায় বসেন চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা। পরে সারাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার কথা জানানো হয়।
চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্য সচিব সামীম মোহাম্মদ আফজাল, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।
বৈঠক শেষে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান জানান, আজ বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যায়নি। শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হবে। সেহেরি খেতে হবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। ১৪ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শবে কদরের দিন ধার্য করা হয়।
এর আগে মাগরিবের নামাজের পর সভাকক্ষে আলোচনায় বসেন চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা। পরে সারাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার কথা জানানো হয়।
চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্য সচিব সামীম মোহাম্মদ আফজাল, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।
সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ছে না
নিউজ ডেস্ক : সরকারী চাকরির বয়স বাড়ছে না। বয়সসীমা বাড়ানোর মত কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। বুধবার জাতীয় সংসদে ফিরোজা বেগম চিনুর টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। মো. আয়েন উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারী চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রথা বাতিল করার কোন পরিকল্পনাও সরকারের নেই। বিশেষায়িত পদে এবং যে সকল সংস্থার কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল সংকট রয়েছে, সেসব সংস্থায় উপযুক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গকে সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এছাড়া প্রশাসনিক ও মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেসব দফতর-সংস্থা দ্রুত জনবল নিয়োগ সম্ভব না, সেসব দফতর-সংস্থায়ও অবসরপ্রাপ্ত সরকরী কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে জনবল সংকট নিরসনসহ সরকারী কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়। যে কারণে জনস্বার্থে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা এখনো আছে।
মাহজাবিন খালেদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত সচিব পদে ১০৪ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৬০৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ১৪০৭ জন, উপসচিব পদে ১৪১৪ জনসহ মোট তিন হাজার ৫৩৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনে গতিশীলতা আনতে পদোন্নতি প্রক্রিয়াকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে পাবলিক সার্ভিস এ্যাক্ট প্রণয়ন করার হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। মো. আয়েন উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারী চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রথা বাতিল করার কোন পরিকল্পনাও সরকারের নেই। বিশেষায়িত পদে এবং যে সকল সংস্থার কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল সংকট রয়েছে, সেসব সংস্থায় উপযুক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গকে সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এছাড়া প্রশাসনিক ও মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেসব দফতর-সংস্থা দ্রুত জনবল নিয়োগ সম্ভব না, সেসব দফতর-সংস্থায়ও অবসরপ্রাপ্ত সরকরী কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে জনবল সংকট নিরসনসহ সরকারী কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়। যে কারণে জনস্বার্থে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা এখনো আছে।
মাহজাবিন খালেদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত সচিব পদে ১০৪ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৬০৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ১৪০৭ জন, উপসচিব পদে ১৪১৪ জনসহ মোট তিন হাজার ৫৩৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনে গতিশীলতা আনতে পদোন্নতি প্রক্রিয়াকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে পাবলিক সার্ভিস এ্যাক্ট প্রণয়ন করার হচ্ছে।
Monday, June 15, 2015
রমজান মাসের ৩০ আমল
الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد المرسلين محمد وآله وأصحابه أجمعين أما بعد
রমাদান মাস আল্লাহ তা‘আলা এক বিশেষ নিয়ামাত। সাওয়াব অর্জন করার মৌসুম। এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, রহমাত, বরকত ও নাজাতের মাস-রমাদান মাস।
আলকুরআনে এসেছে,
﴿ شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ ﴾ [البقرة: ١٨٥]
‘‘রমাদান মাস, যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকদের পথ প্রদর্শক এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে’’ [সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫]
রমাদান মাসের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ تُفْتَحُ فِيهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَتُغْلَقُ فِيهِ أَبْوَابُ الْجَحِيمِ وَتُغَلُّ فِيهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِينِ لِلَّهِ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ»
‘‘রমাদান- বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোযা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে দেয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল, সে বঞ্চিত হল (মহা কল্যাণ হতে)’’ [সুনান আত-তিরমিযি: ৬৮৩]
এ মাসে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে যেতে পারি, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি। নিম্নে রমাদান মাসের আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। তবে এ আমলগুলো করার জন্য শর্ত হলো:
এক. ইখলাস অর্থাৎ ‘‘একনিষ্ঠতার সাথে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যে আমল করা। সুতরাং যে আমল হবে টাকা উপার্জনের জন্য, নেতৃত্ব অর্জনের জন্য ও সুনাম-খ্যাতি অর্জনের জন্যে সে আমলে ইখলাস থাকবে না অর্থাৎ এসব ইবাদাত বা নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে না বরং তা ছোট শির্কে রূপান্তরিত হতে পারে। আল-কুরআনে এসেছে,
﴿ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ ﴾ [البينة: ٥]
“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ‘ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে” [সূরা আল-বাইয়্যেনাহ : ৫]
দুই. ইবাদাতের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ। সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে সকল ইবাদাতের কথা উল্লেখ আছে সেগুলো পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ নেই। কারণ, ইবাদাত হচ্ছে তাই যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়ে দিয়েছেন।
কুরআনে এসেছে,
কুরআনে এসেছে,
وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ﴿ ٱلۡعِقَابِ ٧ ﴾ [الحشر: ٧]
‘এবং রাসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও’ [সূরা হাশর: ৭]
এ বিষয়ে রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ ».
‘‘যে এমন ইবাদত করল যাতে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই তা পরিত্যাজ্য হিসাবে গণ্য হবে’’। [সহীহ মুসলিম : ৪৫৯০]
রমাদান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো হলো-
[১] সিয়াম পালন করাঃ
ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি রুকন হল সিয়াম। আর রমাদান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ। সেজন্য রমাদান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ ﴾ [البقرة: ١٨٥]
“সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে, মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে” [সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫]
সিয়াম পালনের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ »
‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’’ [সহীহ বুখারী : ২০১৪]
«مَا مِنْ عَبْدٍ يَصُوْمُ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ إِلاَّ بَاعَدَ اللهُ بِذَلِكَ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا»
‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তাদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন’’। [সহীহ মুসলিম : ২৭৬৭]
[২] সময় মত সালাত আদায় করা
সিয়াম পালনের সাথে সাথে সময় মত নামায আদায় করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয়। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে,
﴿إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ كِتَٰبٗا مَّوۡقُوتٗا ١٠٣ ﴾ [النساء: ١٠٣]
‘নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।’ [সূরা নিসা : ১০৩]
এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে,
«عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَقْرَبُ إِلَى الْجَنَّةِ قَالَ الصَّلَاةُ عَلَى مَوَاقِيتِهَا»
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী? তিনি বললেন, সময় মত নামায আদায় করা। [সহীহ মুসলিম : ২৬৩]
[৩] সহীহভাবে কুরআন শেখা
রমাদান মাসে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। এ মাসের অন্যতম আমল হলো সহীহভাবে কুরআন শেখা। আর কুরআন শিক্ষা করা ফরয করা হয়েছে। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ ﴾ [العلق: ١]
‘‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’’ [সূরা আলাক : ১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শেখার নির্দেশ দিয়ে বলেন,
« تَعَلَّمُوا الْقُرْآنَ ، وَاتْلُوهُ»
‘‘তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর’’ [মুসনাদ আলজামি : ৯৮৯০]
[৪] অপরকে কুরআন পড়া শেখানো
রমাদান মাস অপরকে কুরআন শেখানোর উত্তম সময়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সাহাবীদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ»
‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৫০২৭]
«مَنْ عَلَّمَ آيَةً مِنْ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، كَانَ لَهُ ثَوَابُهَا مَا تُلِيَتْ»
‘যে আল্লাহর কিতাব থেকে একটি আয়াত শিক্ষা দিবে, যত তিলাওয়াত হবে তার সাওয়াব সে পাবে’ [সহীহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবুবিয়্যাহ : ০৭]
[৫] সাহরী খাওয়া
সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদীসে এসেছে,
«السُّحُورُ أَكْلَةٌ بَرَكَةٌ فَلاَ تَدَعُوهُ ، وَلَوْ أَنْ يَجْرَعَ أَحَدُكُمْ جَرْعَةً مِنْ مَاءٍ ، فَإِنَّ اللَّهَ وَمَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الْمُتَسَحِّرِينَ»
‘‘সাহরী হল বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন’’ [মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১, সহীহ]
[৬] সালাতুত তারাবীহ পড়া
সালাতুত তারাবীহ পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদীসে এসেছে,
« مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»
‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমাদানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’ [সহীহ আল-বুখারী : ২০০৯]
তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীরস্থীরভাবে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সাথে আদায় করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে আছে,
«إِنَّهُ مَنْ قَامَ مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنْصَرِفَ كُتِبَ لَهُ قِيَامُ لَيْلَة»ٍ
‘‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রস্থান করা অবধি সালাত আদায় করবে (সালাতুত তারাবীহ) তাকে পুরো রাত কিয়ামুল লাইলের সাওয়াব দান করা হবে’’ [সুনান আবূ দাউদ : ১৩৭৭, সহীহ]।
তারাবীর রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই লিংক গুলো দেখতে পারেনঃ
[৭] বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা
এটি কুরআনের মাস। তাই এ মাসে অন্যতম কাজ হলো বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا ، لاَ أَقُولُ الْم حَرْفٌ ، وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلاَمٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ»
‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ’’ [সুনান আত-তিরমিযী: ২৯১০, সহীহ]।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদান ব্যতীত কোন মাসে এত বেশি তিলাওয়াত করতেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«وَلاَ أَعْلَمُ نَبِىَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِى لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ».
‘‘রমাদান ব্যতীত অন্য কোনো রাত্রিতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করতে, কিংবা ভোর অবধি সালাতে কাটিয়ে দিতে অথবা পূর্ণ মাস রোযা পালন করে কাটিয়ে দিতে দেখি নি’’ [সহীহ মুসলিম : ১৭৭৩]।
[৮] শুকরিয়া আদায় করা
রমাদান মাস পাওয়া এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা এবং আগামী রমাদান পাওয়ার জন্য তাওফীক কামনা করা। রমাদান সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে,
﴿ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٥]
‘‘আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।’’[সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫]
﴿وَإِذۡ تَأَذَّنَ رَبُّكُمۡ لَئِن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِيدَنَّكُمۡۖ وَلَئِن كَفَرۡتُمۡ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٞ ٧ ﴾ [ابراهيم: ٧]
‘‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন’।’’ [সূরা ইবরাহীম : ৭]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করে বলতেন
« الْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ »
অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য [সুনান আত-তিরমিযী : ২৭৩৮]
[৯] কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা
এ মাসটিতে একটি ভাল কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সেজন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভাল কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« وَيُنَادِى مُنَادٍ يَا بَاغِىَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِىَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلِلَّهِ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ »
‘‘এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহবান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ৬৮৪]
[১০] সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়া
রমাদান মাস ছাড়াও সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমাদানের কারণে আরো বেশি ফজিলত রয়েছে। যেহেতু সাহরী খাওয়ার জন্য উঠতে হয় সেজন্য রমাদান মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করার বিশেষ সুযোগও রয়েছে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ صَلاَةُ اللَّيْلِ »
‘‘ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাতের সালাত অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সালাত’’ [সহীহ মুসলিম : ২৮১২]
[১১] বেশি বেশি দান-সদাকাহ করা
এ মাসে বেশি বেশি দান-সাদাকাহ করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। ইয়াতীম, বিধবা ও গরীব মিসকীনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও বেশি বেশি দান খয়রাত করা। হিসাব করে এ মাসে যাকাত দেয়া উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
«كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ ، وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ»
‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমাদানে তাঁর এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত’’ [সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]
[১২] উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা
রমাদান মাস নিজকে গঠনের মাস। এ মাসে এমন প্রশিক্ষণ নিতে হবে যার মাধ্যমে বাকি মাসগুলো এভাবেই পরিচালিত হয়। কাজেই এ সময় আমাদেরকে সুন্দর চরিত্র গঠনের অনুশীলন করতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ فَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ يَوْمَئِذٍ وَلاَ يَسْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّى امْرُؤٌ صَائِمٌ»
‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোযা রাখে, সে যেন তখন অশস্নীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। রোযা রাখা অবস্থায় কেউ যদি তার সাথে গালাগালি ও মারামারি করতে আসে সে যেন বলে, আমি রোযাদার’’ [সহীহ মুসলিম : ১১৫১]
[১৩] ই‘তিকাফ করা
ই‘তিকাফ অর্থ অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষদের থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমাদানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ই‘তিকাফ করতেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
« كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعْتَكِفُ فِي كُلِّ رَمَضَانَ عَشْرَةَ أَيَّامٍ فَلَمَّا كَانَ الْعَامُ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ يَوْمًا».
‘‘প্রত্যেক রমাযানেই তিনি শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। কিন্তু জীবনের শেষ রমযানে তিনি ইতিকাফ করেছিলেন বিশ দিন’’ [সহীহ আলবুখারী : ২০৪৪]। দশ দিন ই‘তেকাফ করা সুন্নাত।
[১৪] দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করা
রমাদান মাস হচ্ছে দ্বীনের দাওয়াতের সর্বোত্তম মাস। আর মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকাও উত্তম কাজ। এজন্য এ মাসে মানুষকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার জন্য আলোচনা করা, কুরআন ও হাদীসের দারস প্রদান, বই বিতরণ, কুরআন বিতরণ ইত্যাদি কাজ বেশি বেশি করা। আলকুরআনের ঘোষণা :
﴿ وَمَنۡ أَحۡسَنُ قَوۡلٗا مِّمَّن دَعَآ إِلَى ٱللَّهِ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ٣٣ ﴾ [فصلت: ٣٣]
‘‘ঐ ব্যক্তির চাইতে উত্তম কথা আর কার হতে পারে যে আল্লাহর দিকে ডাকলো, নেক আমল করলো এবং ঘোষণা করলো, আমি একজন মুসলিম’’ [সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৩৩]
হাদীসে এসেছে,
«مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ »
‘‘ভাল কাজের পথ প্রদর্শনকারী এ কাজ সম্পাদনকারী অনুরূপ সাওয়াব পাবে’’ [সুনান আত-তিরমীযি : ২৬৭০]
[১৫] সামর্থ্য থাকলে উমরা পালন করা
এ মাসে একটি উমরা করলে একটি হাজ্জ আদায়ের সমান সাওয়াব হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«قَالَ فَإِنَّ عُمْرَةً فِي رَمَضَانَ تَقْضِي حَجَّةً مَعِي».
‘‘রমাদান মাসে উমরা করা আমার সাথে হাজ্জ আদায় করার সমতুল্য’’ [সহীহ আলবুখারী : ১৮৬৩]
[১৬] লাইলাতুল কদর তালাশ করা
রমাদান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কুরআনের ঘোষণা,
﴿ لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ ٣ ﴾ [القدر: ٣]
‘‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’’ [সূরা কদর : ৪]
হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ».
‘‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদাত করবে তাকে পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৩৫]
এ রাত পাওয়াটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। এক হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَجْتَهِدُ فِى الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِى غَيْرِهِ».
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য সময়ের তুলনায় রমদানের শেষ দশ দিনে অধিক হারে পরিশ্রম করতেন’’ [সহীহ মুসলিম : ১১৭৫]
লাইলাতুল কদরের দো‘আঃ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, হে আল্লাহর নবী ! যদি আমি লাইলাতুল কদর পেয়ে যাই তবে কি বলব ? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বলবেঃ
«اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى»
‘‘হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ৩৫১৩]
[১৭] বেশি বেশি দো‘আ ও কান্নাকাটি করা
দো‘আ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এজন্য এ মাসে বেশি বেশি দো‘আ করা ও আল্লাহর নিকট বেশি বেশি কান্নাকাটি করা। হাদীসে এসেছে,
«إِنَّ للهِ تَعَالَى عِنْدَ كُلِّ فِطْرٍ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ، وَذَلِكَ كُلّ لَيْلَةٍ»
‘‘ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমাদানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে’’ [আল জামিউস সাগীর : ৩৯৩৩]
অন্য হাদীসে এসেছে,
«إِنَّ للهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عُتَقَاء فِيْ كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ وَإِنَّهُ لِكُلِّ مُسْلِمٍ فِيْ كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ دَعْوَة مُسْتَجَابَة»
‘‘রমযানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তা‘আলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দো‘আ কবূল করা হয়’’ [সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ১০০২]
[১৮] ইফতার করা
সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা বিরাট ফজিলাতপূর্ণ আমল। কোন বিলম্ব না করা । কেননা হাদীসে এসেছে,
« إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ صَائِمًا فَلْيُفْطِرْ عَلَى التَّمْرِ فَإِنْ لَمْ يَجِدِ التَّمْرَ فَعَلَى الْمَاءِ فَإِنَّ الْمَاءَ طَهُورٌ »
‘‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র ’’ [সুনান আবু দাউদ : ২৩৫৭, সহীহ]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন :
« ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ ».
“পিপাসা নিবারিত হল, শিরা উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কারও নির্ধারিত হল।” [সুনান আবূ-দাউদ: ২৩৫৯, সহীহ]
অপর বর্ণনায় যে এসেছে
«اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ »
“হে আল্লাহ! তোমার জন্য রোযা রেখেছি, আর তোমারই রিযিক দ্বারা ইফতার করছি।” [সুনান আবু দাউদ :২৩৫৮] এর সনদ দুর্বল। আমাদের উচিত সহীহ হাদীসের উপর আমল করা।
[১৯] ইফতার করানো
অপরকে ইফতার করানো একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। কেননা হাদীসে এসেছে,
«مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِمْ ، مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْء. »
‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না’’ [সুনান ইবন মাজাহ : ১৭৪৬, সহীহ]
[২০] তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা
তাওবাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ ফিরে আসা, গুনাহের কাজ আর না করার সিদ্ধান্ত নেয়া। এ মাস তাওবাহ করার উত্তম সময়। আর তাওবাহ করলে আল্লাহ খুশী হন। আল-কুরআনে এসেছে,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ وَيُدۡخِلَكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ﴾ [التحريم: ٨]
‘‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাটি তাওবা; আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত’’ [সূরা আত-তাহরীম : ৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى اللَّهِ فَإِنِّى أَتُوبُ فِى الْيَوْمِ إِلَيْهِ مِائَةَ مَرَّةٍ ».
‘‘হে মানবসকল! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর আমি দিনে তাঁর নিকট একশত বারের বেশি তাওবাহ করে থাকি’’ [সহীহ মুসলিম : ৭০৩৪]
তবে তাওবাহ ও ইস্তেগফারের জন্য উত্তম হচ্ছে, মন থেকে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়া, আর তা হচ্ছে,
«اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُك وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ»
‘‘হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া প্রকৃত এবাদতের যোগ্য কেউ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার গোলাম আর আমি সাধ্যমত তোমার সাথে কৃত অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি। আমার কৃত-কর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমাকে যত নেয়ামত দিয়েছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করছি। যত অপরাধ করেছি সেগুলোও স্বীকার করছি। অত:এব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।’’
ফযিলাত: ‘‘যে কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দিনের বেলা এই দু‘আটি (সাইয়েদুল ইসতিগফার) পাঠ করবে ঐ দিন সন্ধ্যা হওয়ার আগে মৃত্যু বরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে এবং যে কেউ ইয়াকিনের সাথে রাত্রিতে পাঠ করবে ঐ রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে।’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৬৩০৬]
[২১] তাকওয়া অর্জন করা
তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমাদান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কুরআনে এসেছে,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [البقرة: ١٨٣]
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো’’ [সূরা আলবাকারাহ : ১৮৩]
﴿ۚ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ ﴾ [الطلاق: ٢]
যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। [সূরা তালাক : ০২]
[২২] ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করা
ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করা। এটি একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ صَلَّى الغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ»
যে ব্যক্তি ফজর জামাআত আদায় করার পর সূর্য উদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করবে, অতঃপর দুই রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ হাজ্জ ও উমারাহ করার প্রতিদান পাবে। [সুনান আত-তিরমিযী : ৫৮৬]
[২৩] ফিতরাহ দেয়া
এ মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে ফিতরাহ দেয়া আবশ্যক। ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
«أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ».
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের সালাত আদায়ের পুর্বে ফিতরাহ আদায় করার আদেশ দিলেন। [সহীহ আল-বুখারী :১৫০৩]
[২৪] অপরকে খাদ্য খাওয়ানো
রমাদান মাসে লোকদের খাওয়ানো, বিশেষ করে সিয়াম পালনকারী গরীব, অসহায়কে খাদ্য খাওয়ানো বিরাট সাওয়াবের কাজ । কুরআনে এসেছে,
﴿ وَيُطۡعِمُونَ ٱلطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ مِسۡكِينٗا وَيَتِيمٗا وَأَسِيرًا ٨ ﴾ [الانسان: ٨]
অর্থ: তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। [সূরা আদ-দাহর: ৮]
এ বিষয়ে হাদীসে বলা হয়েছে,
«عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ:«تُطْعِمُ الطَّعَامَ وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ ، وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ».
‘‘আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, একজন লোক এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামে উত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, অন্যদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম দেয়া’’ [সহীহ আল-বুখারী : ১২]
অপর বর্ণনায় বর্ণিত আছে যে,
«أَيُّمَا مُؤْمِنٍ أَطْعَمَ مُؤْمِنًا عَلَى جُوعٍ أَطْعَمَهُ اللهُ مِنْ ثِمَارِ الْجَنَّةِ»
‘‘যে কোনো মুমিন কোনো ক্ষুধার্ত মুমিনকে খাওয়াবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। [বাইহাকী, শু‘আবুল ইমান : ৩০৯৮, হাসান]
[২৫] আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নীত করা
আত্মীয়তার সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তা রক্ষা করাও একটি ইবাদাত। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١ ﴾ [النساء: ١]
‘‘আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আরও তাকওয়া অবলম্বন কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক। [সূরা আন-নিসা: ১]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«بُلُّوا أَرْحَامَكُمْ وَلَوْ بِالسَّلَامِ»
“সালাম বিমিয়ের মাধ্যমে হলেও আত্নীয়তার সম্পর্ক তরতাজা রাখ।” [সহীহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবওয়িয়্যাহ : ১৩]
[২৬] কুরআন মুখস্থ বা হিফয করা
কুরআন হিফয করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা নিজেই কুরআন হিফযের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি এ দায়িত্ব মূলত বান্দাদেরকে কুরআন হিফয করানোর মাধ্যমেই সম্পাদন করেন। কুরআনে এসেছে,
﴿ إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا ٱلذِّكۡرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ٩ ﴾ [الحجر: ٩]
‘‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই তার হিফাযতকারী’’ -[সূরা আল-হিজর: ৯]
যে যত বেশি অংশ হিফয করতে পারবে তা তার জন্য ততই উত্তম।
আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِى الدُّنْيَا فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا ».
‘‘কুরআনের ধারক-বাহককে বলা হবে কুরআন পড়ে যাও, আর উপরে উঠতে থাক, ধীর-স্থিরভাবে তারতীলের সাথে পাঠ কর, যেমন দুনিয়াতে তারতীলের সাথে পাঠ করতে। কেননা জান্নাতে তোমার অবস্থান সেখানেই হবে, যেখানে তোমার আয়াত পড়া শেষ হবে” -[সুনান আত-তিরমিযী : ২৯১৪]
[২৭] আল্লাহর যিকর করা
এ মাসে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা ও তাসবীহ পাঠ করা। সময় পেলেই
سبحان الله ، الحمدلله ، لا إله إلا الله ، الله أكبر পড়া।
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى مِنَ الْكَلاَمِ أَرْبَعًا : سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ ، فَمَنْ قَالَ : سُبْحَانَ اللهِ ، كُتِبَ لَهُ عِشْرُونَ حَسَنَةً ، وَحُطَّتْ عَنْهُ عِشْرُونَ سَيِّئَةً ، وَمَنْ قَالَ : اللَّهُ أَكْبَرُ فَمِثْلُ ذَلِكَ ، وَمَنْ قَالَ : لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَمِثْلُ ذَلِكَ ، وَمَنْ قَالَ : الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ مِنْ قِبَلِ نَفْسِهِ كُتِبَ لَهُ ثَلاَثُونَ حَسَنَةً وَحُطَّتْ عَنْهُ ثَلاَثُونَ سَيِّئَةً»
অর্থ: ‘‘আল্লাহ তা’আলা চারটি বাক্যকে বিশেষভাবে নির্বাচিত করেছেন, তাহলো سبحان الله ، الحمدلله ، لا إله إلا الله ، الله أكبر যে ব্যক্তি سبحان الله পড়বে, তার জন্য দশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি الله أكبر পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি لا إله إلا الله পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ পড়বে, তার জন্য ত্রিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর ত্রিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়’’। [মুসনাদ আহমাদ : ১১৩৪৫]
[২৮] মিসওয়াক করা
মেসওয়াকের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। হাদীসে এসেছে,
«السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ»
অর্থাৎ মেসওয়াক মুখের জন্য পবিত্রকারী, এবং রবের সন্তুষ্টি আনয়নকারী। [সহীহ ইবন খুযাইমাহ : ১৩৫] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা রেখেও মেসওয়াক করতেন বলে বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়।
[২৯] একজন অপরজনকে কুরআন শুনানো
রমাদান মাসে একজন অপরজনকে কুরআন শুনানো একটি উত্তম আমল। এটিকে দাওর বলা হয়। ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
« وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ حَتَّى يَنْسَلِخَ يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْقُرْآنَ »
জিবরাইল আলাইহিস সালাম রমাদানের প্রতি রাতে রমাদানের শেষ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসূল তাকে কুরআন শোনাতেন। [সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]
ইবনে হাজার রাহেমাহুল্লাহ্ বলেন : জিবরাইল প্রতি বছর রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করে এক রমযান হতে অন্য রমযান অবধি যা নাযিল হয়েছে, তা শোনাতেন এবং শুনতেন। যে বছর রাসূলের অন্তর্ধান হয়, সে বছর তিনি দু বার শোনান ও শোনেন ।
[৩০] কুরআন বুঝা ও আমল করা
কুরআনের এ মাসে কুরআন বুঝা ও আমল করা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। কুরআন অনুযায়ী নিজের জীবনকে গড়ে তোলা। এ বিষয়ে কুরআনে নির্দেশ দেয়া হয়েছে,
﴿ٱتَّبِعُواْ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡ وَلَا تَتَّبِعُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَۗ قَلِيلٗا مَّا تَذَكَّرُونَ ٣ ﴾ [الاعراف: ٣]
‘তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর’ -[সূরা আল-আ‘রাফ : ৩]
কুরআনের জ্ঞানে পারদর্শী আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
«كُنَّا نَتَعَلَّمُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرَ آيَاتٍ فَمَا نَعْلَمُ الْعَشْرَ الَّتِي بَعْدَهُنَّ حَتَّى نَتَعَلَّمَ مَا أُنْزِلَ فِي هَذِهِ الْعَشْرِ مِنَ الْعَمَلِ»
‘আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কুরআনের দশটি আয়াত শিক্ষা গ্রহণ করতাম, এরপর ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পরবর্তী দশটি আয়াত শিক্ষা করতাম না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা এই দশ আয়াতের ইলম ও আমল শিখতাম’ [শরহে মুশকিলুল আছার : ১৪৫০]
যা করণীয় নয়
রমাদান মাসের ফজিলত হাসিল করার জন্য এমন কিছু কাজ রয়েছে যা থেকে বিরত থাকা দরকার, সেগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :
1. বিলম্বে ইফতার করা
2. সাহরী না খাওয়া
3. শেষের দশ দিন কেনা কাটায় ব্যস্ত থাকা
4. মিথ্যা বলা ও অন্যান্য পাপ কাজ করা
5. অপচয় ও অপব্যয় করা
6. তিলাওয়াতের হক আদায় না করে কুরআন খতম করা
7. জামা‘আতের সাথে ফরয সালাত আদায়ে অলসতা করা
8. বেশি বেশি খাওয়া
9. রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদাত করা
10. বেশি বেশি ঘুমানো
11. সংকট তৈরি করা জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধির জন্য
12. অশ্লীল ছবি, নাটক দেখা
13. বেহুদা কাজে রাত জাগরণ করা
14. বিদ‘আত করা
15. দুনিয়াবী ব্যস্ততায় মগ্ন থাকা
প্রিয় পাঠক!
রমাদান মাস পাওয়ার মত সৌভাগ্যের বিষয় আর কী হতে পারে! আমরা যদি এ মাসের প্রতিটি আমল সুন্নাহ পদ্ধতিতে করতে পারি তবেই আমাদের রমাদান পাওয়া সার্থক হবে।
কেননা হাদীসে এসেছে,
কেননা হাদীসে এসেছে,
«وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَتَى عَلَيْهِ شَهْرُ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ ، وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ»
‘‘যে ব্যক্তি রমাদান মাস পেলো অথচ তার গুনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক’’ [শারহুস সুন্নাহ : ৬৮৯]।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে রমাদান মাসের ফজিলত হাসিল করার তাওফীক দিন। আমীন!
وصلى الله على نبينا محمد وعلي اله وأصحابه أجمعين – وأخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين
Subscribe to:
Posts (Atom)